আজকাল ওয়েবডেস্ক: একসময় চায়ের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরতা প্রায় ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছিল লিংকনশায়ারের ৬১ বছরের এক প্রৌঢ়া সুজান গার্নারকে। দিনে প্রায় ২০ কাপ চা এবং একইসঙ্গে প্রতিটি কাপে চার চামচ করে চিনি। সপ্তাহে ১৪০ কাপ চা মানে প্রায় প্রতি তিন দিনেই এক কেজি চিনি! ফলস্বরূপ, তাঁর ওজন বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ স্টোন ১২ পাউন্ড।অর্থাৎ ভারতবর্ষে যা প্রায় ৯৪ কেজি। দিনের পর দিন তাঁকে ওভার সাইজড পোশাক পরতে হত। পাশাপাশি বাইরের জগতে চলাফেরা করা নিয়ে চরম হতাশা ও কুণ্ঠা ছিল।

২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে, সুজানের জেনারেল প্র্যাকটিশনার বা পারিবারিক চিকিৎসক তাঁকে পরামর্শ দেন মাউনজারো নামের একটি ওজন নিয়ন্ত্রণকারী ইঞ্জেকশন নিতে। এটি শুরু হয় ২.৫ মি.গ্রা. ডোজে, যা ধীরে ধীরে বাড়িয়ে ৭ মি.গ্রা. পর্যন্ত নেওয়া হয়। শুরুর দিকে তেমন কোনও বাহ্যিক পরিবির্তন লক্ষ্য করা না গেলেও প্রথম সপ্তাহেই সাত পাউন্ড ওজন কমে যায়, যা দেখে চমকে ওঠেন সুজান। এরপর NHS-এর নির্দেশনা মেনে প্রতিদিন হাঁটেন ১০,০০০ ধাপ, ২ লিটার জল খান৷ পাশাপাশি ফল-মূল বা সবজি খাওয়ার পরিমাণ বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় দিনে পাঁচ বার।

আরও পড়ুন: "পাঁচ হাজারে যাবে আমার সঙ্গে?" প্রকাশ্যে যুবতীকে কু-প্রস্তাব, অপহরণের চেষ্টা, বন্দুক উঁচিয়ে হুমকি, অভিযুক্ত শিক্ষক

তবে এক জায়গায় তিনি কোনও ছাড় দেননি, আর তা হল চা। চিনি ছেড়ে দিলেও চা ছাড়তে পারেননি সুজান। প্রতিটি কাপে আগের মতোই চার চামচ, তবে এখন তা ক্যালরি-বিহীন সুইটনার। সুজানের কথায়, “এটাই ছিল আমার জন্য সবচেয়ে বড় সমঝোতা। চা'ও পেলাম, চিনিও গেল!”

এই আট মাসেই সুজান ঝরিয়েছেন ৬ স্টোন ওজন, অর্থাৎ এখানকার হিসেবে প্রায় ৩৮ কেজি। সুজানের ওজন এখন ৯ স্টোন, অর্থাৎ ৫৭ কেজির কাছাকাছি। ঠিকঠাক সাইজের পোশাক এখন অনায়াসে গায়ে তোলেন তিনি। যে মহিলা একসময় রোগীদের মত ওভার সাইজড পোষাক পরতে বাধ্য হতেন, তিনিই এখন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে পরেন টাইট জিনস্ ও ফিটিং জামাকাপড়। নিজের কথায়, “নিজেকে এখন দশ বছর কম বয়সী মনে হয়।”

আরও পড়ুন: “প্রাণ যাক, তবু রিল ডিলিট নয়!" বারাবাঁকিতে সোশ্যাল মিডিয়ার রিল নিয়ে হইচই, পুলিশের সঙ্গে তুফান ঝামেলায় এ কী ঘটালেন যুবতী? 

খাওয়া-দাওয়ার অভ্যাসেও এসেছে আমূল পরিবর্তন। আগে সকালের খাবারে থাকত সাদা পাউরুটির দুটি টোস্ট, জ্যাম, আর দুই কাপ চিনি দেওয়া চা। তার পর দিনভর চলত বিস্কুট, কেক আর ১৮ কাপ চা। এখন সকালের খাবার শুরু হয় একটি সেদ্ধ ডিম, একটি হোলমিল টোস্ট আর দুটি চা দিয়ে- যেখানে রয়েছে সুইটনার আর স্কিম মিল্ক। দিনভর খান ১৮ কাপ চা, তবে প্রতিটিতেই সুইটনার, চিনি নয়। রাতের খাবারে প্লেটে থাকে জ্যাকেট পটেটো, তার সঙ্গে চিজ, বিনস আর সালাদ।

'চিনি ছাড়া'- এই একটি মাত্র সিদ্ধান্ত নতুন জীবন এনে দিল সুজান গার্নারের জন্য।