আজকাল ওয়েবডেস্ক: মঙ্গলবার থেকেই বাংলায় চালু হয়ে যাচ্ছে বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর। ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমারেশন ফর্ম দেবেন বিএলও-রা। সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে আগামী ৪ নভেম্বর থেকেই যা চলবে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এই পরিস্থিতিতে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্যের নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হল ভোটকর্মী এবং বিএলও ঐক্য মঞ্চ। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের (CEO) কাছে একগুচ্ছ গুরুত্বপূর্ণ দাবি ও অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে এই সংস্থার তরফে।
যা মূলত বুথ লেভেল অফিসারদের (BLO) নিরাপত্তা ও Special Intensive Revision (SIR) কার্যক্রমের নির্বিঘ্ন পরিচালনা নিয়ে। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন জেলায় কর্মরত বহু বিএলওরা ইতিমধ্যেই হুমকি, মানসিক চাপ ও শারীরিক হয়রানির মুখে পড়ছেন।
সংগঠনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিএলও-দের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। তা অবিলম্বে নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচন কমিশনে পাঠানো চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, যাঁরা প্রকাশ্য সভায় বিএলওদের ভয় দেখাচ্ছেন বা হুমকি দিচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের কার্যালয়ের নিরপেক্ষতা প্রমাণিত হয়।
বিভিন্ন জেলা থেকে রিপোর্ট পাওয়া গেছে যে, বিএলওদের স্থানীয় নেতাদের ইচ্ছামতো কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে, এমনকি ছুটির দিনেও তাঁদের ডেকে পাঠানো হচ্ছে। বিশেষ করে মহিলা বিএলওরা বারবার হেনস্থার শিকার হচ্ছেন। স্থানীয় দুষ্কৃতীরা তাঁদের টার্গেট করছে।
সংগঠনের দাবি, মহিলা বিএলওদের জন্য মহিলা পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। সংবেদনশীল বুথ ও এলাকায় আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানানো হয়েছে, যাতে কাজ নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়। অভিযোগ উঠেছে, কয়েকজন জেলা শাসক (D.M.) নাকি মৌখিকভাবে “ম্যাপিংয়ের কাজে হেরফের” করার নির্দেশ দিয়েছেন।
সংগঠন এই বিষয়ে তদন্ত চেয়েছে এবং সঠিকভাবে ম্যাপিং হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। বিএলওদের কাজ সহজ করতে তাঁদের প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও ডেটা প্যাক সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠন।
এমনকি, বিএলওদের পারিশ্রমিক আংশিকভাবে আগাম প্রদান করারও দাবি জানানো হয়েছে, যাতে তাঁরা কাজের সময় আর্থিক সমস্যায় না পড়েন। ভোটকর্মী ও বিএলও ঐক্য মঞ্চ জানিয়েছে, বিএলওদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা বজায় না রাখলে এসআইআর প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে, যা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য ক্ষতিকর হবে।
সংগঠন আশা প্রকাশ করেছে, নির্বাচন কমিশন অবিলম্বে এই দাবিগুলির বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে। এর আগে, প্রথম পর্যায়ে বিহারে এসআইআর ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। দ্বিতীয় দফায় মোট ১২টি রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এসআইআর-এর দিনক্ষণ ঘোষণা করা হয়।
তালিকায় রয়েছে সেই সব রাজ্য, যেখানে আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার জানালেন, দ্বিতীয় দফায় এসআইআর হবে- বাংলা, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, পুদুচেরি, আন্দামান-নিকোবর, গোয়া, গুজরাট, তামিলনাড়ু, লাক্ষাদ্বীপ, কেরলে।
সোমবার বিকেলে দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিল, সফল প্রথম দফার এসআইআর। ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর চলবে দ্বিতীয় দফার এসআইআরের এনুমারেশন ফর্ম প্রক্রিয়া।
৯ ডিসেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ। ৯ ডিসেম্বর থেকে ৩১ জানুয়ারি অভিযোগের ভিত্তিতে শুনানি, ৭ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।
