আজকাল ওয়েবডেস্ক: চিনে আশ্চর্য ঘটনা৷ হুবেই প্রদেশের এই ঘটনায় তোলপাড়৷ জানা গিয়েছে, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী সকলকে চমকে দিয়ে মাঝরাতে হোস্টেল রুমেই সন্তান প্রসব করেছেন। এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার খবর দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার জেরে বিস্ময় ও জোর আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, মাত্র ২০ বছর বয়সী এই ছাত্রী তাঁর ফাইনাল পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে থাকছিলেন। বেশ কিছুদিন বাড়ি ফেরেন নি বলে জানা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, হোস্টেলের উপরতলায় ছিলেন এই তরুণী। বিছানায় শুয়ে থাকাকালীন আচমকা প্রচণ্ড পেট ব্যথায় কাতরাতে থাকেন।

সূত্রে জানা গিয়েছে, গভীর রাতে তাঁর রুমমেট হঠাৎ এক গন্ধ পেয়ে জেগে ওঠেন। রক্তের গন্ধ টের পান ঘরে কিছু একটা ঘটেছে। এরপর পরিস্থিতি বুঝে তিনি সঙ্গে সঙ্গে হোস্টেলের জরুরি সেবায় ফোন করেন। তবে, ততক্ষণে তরুণীর প্রসব হয়ে গিয়েছে বলে জানা যায়। তরুণী নবজাতকের জন্ম দিয়েছে।

আরও পড়ুনঃ 'হৃদয় দাও,কিন্তু ওটিপি নয়'! জালিয়াতি রুখতে উত্তর প্রদেশ পুলিশের অভিনব বার্তা, ভিডিও ভাইরালে উত্তাল নেটপাড়া

এখানেই থেমে নেই৷ সবচেয়ে অবাক করার মতো বিষয় হল, রুমমেট পুরো ঘটনার সময় ধীরস্থির ছিলেন। তিনি মন্তব্য করেন,'এটা ওর প্রথম সন্তান নয়।' পরে জানা গিয়েছে, ওই ছাত্রী আগেও এক সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তাই হয়তো তিনি এতটা ঠান্ডা মাথায় পুরো পরিস্থিতি সামলেছেন।

পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তরুণী জানিয়েছেন, তিনি ভেবেছিলেন সকালে হাসপাতালে যাবেন। কারণ প্রেগনেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী তিনি মনে করেছিলেন প্রসব শুরু হতে এখনও সময় আছে। তরুণী বলেন,  'তখন লাইট বন্ধ ছিল। রাতে সবাই ঘুমচ্ছিল। আমি ভেবেছিলাম সময় আছে এখনও। কিন্তু প্রসব খুব দ্রুত হয়ে গেল।'

আরও পড়ুনঃ 'সুখ দিতে পারো না বেঁচে থেকে লাভ কী?' শরীরী খিদে মেটাতে ব্যর্থ স্বামীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়লেন স্ত্রী...

চিকিৎসকরা জানান, সদ্যোজাত শিশুটির ওজন প্রায় ৪.৫ কেজি। এটি চিকিৎসা পরিভাষায় একটি 'জায়ান্ট বেবি' হিসেবে চিহ্নিত। খবর মারফত, ছাত্রীটি প্রচুর রক্তক্ষরণে ভুগছিলেন। প্রসবের পর সংকটজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন। এ নিয়ে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ প্রশ্ন তোলে, কীভাবে এমন গুরুতর গর্ভাবস্থায় একজন ছাত্রী হোস্টেলে একা থাকতে পারেন। তাও  কোনও তত্ত্বাবধান ছাড়া।

তবে সৌভাগ্যক্রমে, জরুরি চিকিৎসার কারণে মা ও সন্তান দুজনেই এখন সুস্থ আছেন এবং সেরে উঠছেন। তাঁরা বর্তমানে চিকিৎসাধীন। সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুনঃ রাতের অন্ধকারে ট্রেনে হাতেনাতে ধরা পড়ল চোর, কোনওমতে মায়ের অস্থি বাঁচালেন বিজেপি নেতা...

ঘটনাটি চিনের সামাজিক মাধ্যমে ইতিমধেই ব্যাপক আলোড়ন তৈরী করেছে। কেউ কেউ প্রশংসা করে লিখেছেন,  'এটাই সাফল্যের চূড়ান্ত উদাহরণ। একসঙ্গে ডিগ্রি ও দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম!' অন্য একজন লিখেছেন, 'তার সঙ্গী নিশ্চয়ই চমৎকার কেউ, তবে স্বাস্থ্যের নিরাপত্তা সবসময় অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত। মায়ের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।' এই ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় ও স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যে ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্যসেবা ও মনিটরিং নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।