আজকাল ওয়েবডেস্ক: জেল না ব্যায়ামাগার ধরতে পারবেন না। জেলের ভিতরেই শাগরেদদের সঙ্গে ঠাট্টা তামাশা করতে করতে শরীরচর্চা করছেন এক ব্যক্তি। তাও যে সে ব্যক্তি নন, রীতিমতো মাদক পাচারের আসামি। আর সেই শরীরচর্চার ভিডিও অনলাইনে পোস্ট করছেন অন্য এক শাগরেদ। এমনই ঘটনায় শিরোনামে রায়পুর কেন্দ্রীয় কারাগার।
জেলের ভিতর এক বিচারাধীন মাদক কারবারির শরীরচর্চার ভিডিও ভাইরাল হতেই তুমুল বিতর্ক দানা বেঁধেছে। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, মাদক চক্র চালানোর অভিযোগে ধৃত রশিদ আলি ওরফে রাজা বৈজহার জেলের ১৫ নম্বর ব্যারাকে ব্যায়াম করছেন। মনে করা হচ্ছে, ভিডিওটি ১৩ থেকে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে তোলা হয়েছিল।
#RaipurJail: A shocking video from Raipur Central Jail shows drug kingpin Rashid Ali working out and clicking selfies inside prison using a smuggled phone! pic.twitter.com/ApDBno8cpN
— THE NEWSROOM (@TheNewsroom_tnr)Tweet by @TheNewsroom_tnr
শুধু তাই নয়, জেলের অন্দরেই কুখ্যাত অপরাধী রোহিত যাদব এবং রাহুল বাল্মীকির সঙ্গে রশিদ আলির সেলফিও প্রকাশ্যে এসেছে। ছবি প্রকাশ্যে আসতেই আঁতকে উঠেছেন সাধারণ মানুষ। নেটিজেনদের একাংশের বক্তব্য, ছবি দেখেই আন্দাজ করা যায় জেলের ভিতরে বন্দিদের কেমন অবাধ বিচরণ। পাশাপাশি জেলের ভিতর এভাবে মোবাইলের ব্যবহার নিরাপত্তায় গাফিলতির ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা, যা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠেছে।
তবে গোটা বিষয়টি নিয়ে তুমুল সমালোচনা শুরু হলেও বিষয়টি গুরুতর বলে মানতে নারাজ জেল কর্তৃপক্ষ। কারা প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ তদন্তে জানা গিয়েছে, শশাঙ্ক চোপড়া নামে আরেক বিচারাধীন বন্দি জেলের মধ্যে একটি মোবাইল ফোন পাচার করেন। অভিযোগ, সেই ফোন ব্যবহার করেই রশিদ আলি বন্ধুদের সঙ্গে সেলফি তোলেন এবং শরীরচর্চা-সহ নানা কার্যকলাপের ভিডিও রেকর্ড করেন। আর এই সবই ঘটেছে কর্তব্যরত দুই কারারক্ষীর চোখের সামনেই। প্রাথমিক তদন্তের পর, জেলের সুপারিনটেনডেন্ট কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে দুই কারারক্ষী রাধেলাল খুন্তে এবং বিপিন খালখোকে বরখাস্ত করেছেন বলে খবর। প্রসঙ্গত, অতীতেও একাধিকবার এই দু’জনকে সতর্ক করা হয়েছিল। সহকারী জেল সুপারিনটেনডেন্ট সন্দীপ কাশ্যপকেও সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে খবর। তবে দুই তিনজন সাধারণ কারারক্ষীকে বরখাস্ত করলেই কি সমস্যা মিটবে?
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, সর্ষের মধ্যেই রয়েছে ভূত। কারণ কেবল কয়েকজন কারারক্ষীর গাফিলতিতে এত বড় কাণ্ড হতে পারে না বলেই মত তাঁদের। নিচুতলার কর্মীকে বরখাস্ত করে আসলে রাঘব বোয়ালদের বাঁচানোর চেষ্টা হচ্ছে বলেই মনে করছেন তাঁরা।
গত ১১ জুলাই থেকে রায়পুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন আলি। তাঁকে এনডিপিএস (নারকোটিক ড্রাগস অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্সেস) আইনে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে মাদক চক্র চালানোর পাশাপাশি জেলের ভিতর থেকেই তোলাবাজির অভিযোগও রয়েছে। সূত্রের খবর, জেলেরই কিছু কর্মী তাকে মোবাইল ফোন এবং অন্যান্য নিষিদ্ধ সামগ্রী পেতে সাহায্য করছিল।
রায়পুর কেন্দ্রীয় কারাগার নিয়ে বিতর্ক অবশ্য নতুন নয়। এর আগেও জেলের ভিতর থেকে গ্যাংস্টার আমন সাউয়ের একটি ফটোশুট ভাইরাল হয়েছিল। পরে ঝাড়খণ্ড পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে সাউয়ের মৃত্যু হয়।
