আজকাল ওয়েবডেস্কঃ পিরিয়ডের দিনগুলিতে কম-বেশি সব মেয়েদেরই অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। ঋতুস্রাবের সময়ে দুর্বলতা, পেটে যন্ত্রণা, মেজাজ হারানো, এই ধরনের সমস্যায় ভোগেন না এমন মহিলা বিরল। মাসের পর মাস এই সমস্যা সামলেই চলে জীবন। অস্বস্তিকর পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই মুঠো মুঠো ওষুধ খেতে বাধ্য হন। কিন্তু দীর্ঘদিন এই ধরনের ওষুধ খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মারাত্মক। বরং ভরসা রাখুন একটি পানীয়র উপর। পিরিয়ডে পেটের যন্ত্রণায় এই পানীয় পান করলে দারুণ উপকার পাবেন। তাহলে জেনে নিন কীভাবে বানাবেন সেই পানীয়-
এক কার গরম জলে এক চিমটে দারচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। পিরিয়ডের সময়ে এই পানীয় খেলে উপকার পাবেন। এছাড়াও প্যানে কয়েক টুকরো দারচিনি ও আদা কুচি দিন।দুই গ্লাস জল দিয়ে ফোটাতে থাকুন। জল ফুটে এক গ্লাস পরিমাণ হয়ে গেলে তা ছেঁকে রোজ সকালে খালি পেটে পান করুন। ওভারিয়ান সিস্ট হওয়াকে রোধ করে এই পানীয়। দারচিনি ও আদা পিরিয়ডের চক্রকে স্বাভাবিক রাখে, পিরিয়ডের ব্যথাকে কমায়। ফলে ওভারি সিস্টের সমস্যা থেকেও রেহাই পাওয়া যায়। মাথাব্যথা বা সর্দি-কাশিতে আদা চা বেশ কার্যকরী। পিসিওডির সমস্যা নিয়ন্ত্রণেও আদা চা দারুণ কাজ করে। চাইলে এই পানীয়র সঙ্গে মিশিয়ে নিতে পারেন এক চামচ মধু। সুফল পাবেন।
দারুচিনিতে প্রদাহ-বিরোধী উপাদান রয়েছে যা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এটি পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে একটি প্রাকৃতিক উপায় হতে পারে। দারুচিনি প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনের মাত্রা কমাতে পারে, যা পিরিয়ডের ব্যথার জন্য দায়ী। প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন হল এক ধরনের লিপিড যা জরায়ুর সংকোচন এবং প্রদাহ সৃষ্টি করে, যার ফলে ব্যথা হয়। এছাড়াও এটি শরীরে এন্ডোরফিন নিঃসরণে সাহায্য করে এবং রক্ত সঞ্চালনকে বাড়ায়, যা ঋতুস্রাবের ব্যথা কমাতে সহায়ক। দারুচিনির সুগন্ধ মেজাজ ভাল রাখতে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে, যা পরোক্ষভাবে পিরিয়ডের ব্যথা কমায়।

এছাড়াও পিরিয়ডের সময়ে বিভিন্ন ধরনের হার্বাল চা পান করলে স্বস্তি পেতে পারেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, পিরিয়ডের ব্যথা কম করার জন্য দুধ ছাড়া আদা, গোলমরিচ দেওয়া চা পান করতে পারেন। একইসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের মতে, কয়েকটি টিপস অবলম্বন করলেও পিরিয়ডের ব্যথা থেকে চিরতরে মুক্তি পাওয়া যায়। যেমন নিয়মিত শরীরচর্চা, স্বাস্থ্যকর ডায়েট মেনে চলতে হবে। তবে ব্যথা তীব্র হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ অনেক সময়ে পিরিয়ডের ব্যথার নেপথ্যে অন্য কোনও বড় রোগও থাকতে পারে।
অনেক সময়ে 'পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম' হলে ঋতুস্রাব চলাকালীন যন্ত্রণা হতে দেখা যায়। অস্বাস্থ্যকর ডায়েট ও অনিয়মিত লাইফস্টাইল ওভারিয়ান সিস্টের অন্যতম কারণ। এই সমস্যাকে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছনোর আগে ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার খাওয়াও অত্যন্ত জরুরি। ওটস, ব্রাউন রাইস, মসুর ডাল, সূর্যমুখী বীজ, ফ্ল্যাক্স সিড, চিয়া সিড প্রভৃতি ফাইবারের দুর্দান্ত উৎস। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ খাবার ডায়েটে রাখলে পিসিওএসের সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তাছাড়া এই রোগ থেকে রেহাই পেতে কার্ডিয়ো সবচেয়ে উপযোগী। রোজ সকালে ২০ মিনিট জোরে হাঁটুন, জগিং ও সাইক্লিং করতে পারেন। সাঁতারও খুব ভাল উপকার দেয়। সঙ্গে ফ্রি-হ্যান্ড ব্যায়াম করুন।
