আজকাল ওয়েবডেস্কঃ আজকাল আধুনিক জীবনযাপনের ইঁদুরদৌড়ে শরীরের উপর তো কম অত্যাচার হয় না! কম ঘুম, নামমাত্র খাওয়া, কখনও প্রয়োজনের অতিরিক্ত খেয়ে ফেলা আবার কখনও দু’টো মিলের মধ্যে লম্বা সময়ের ব্যবধান, লিভারকে নাস্তানাবুদ করে ছাড়ছে। তার উপর সপ্তাহান্তে ছোট-বড় পার্টি, গাদা গাদা তেল মশলাদার খাবার আর মদ্যপান তো রয়েছেই। খাবারের বোঝা থেকে লিভার যতটুকু শ্বাস নিয়ে বাঁচার চেষ্টা করে, উল্টোপাল্টা খাওয়ার অভ্যাস ততই তার অবস্থা বিগড়ে দিচ্ছে। 

লিভার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা খাবার হজম থেকে শুরু করে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। তাই লিভারের স্বাস্থ্যের দিকে প্রথম থেকে নজর দেওয়া জরুরি। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ৪০ শতাংশ ভারতীয় নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারে ভুগছেন। আর এই রোগের হাত ধরে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে লিভার সিরোসিসের মতো মারণ ব্যাধি। তাই প্রাথমিক পর্যায় রোগ শনাক্ত করা জরুরি। লিভারের সমস্যার কয়েকটি লক্ষণ প্রাথমিকভাবে মুখে ফুটে ওঠে। জেনে নেওয়া যাক সেই বিষয়ে-

 

আরও পড়ুনঃ বর্ষায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে! কারওর ইলেকট্রিক শক লাগলে প্রথমেই এই কাজটি করলে বাঁচবে প্রাণ

 

১. মুখের ফ্যাকাশে ভাবঃ লিভারের সমস্যা হলে মুখের ত্বক বা চোখের সাদা অংশ হালকা বা ধীরে ধীরে গাঢ় হলুদ হতে শুরু করে। এটি জন্ডিসের লক্ষণ হতে পারে। লিভার শরীর থেকে বিলিরুবিন নামক হলুদ উপাদানটি সঠিকভাবে বার করতে না পারলে রক্তে জমা হতে শুরু করে। তখনই মুখ, চোখ এবং ত্বকে হলুদভাব দেখা দেয়। তাই এই সমস্যাকে অবহেলা করা উচিত নয়। 

২. চোখের নিচে ফোলাভাব বা কালো দাগঃ শুধু অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে নয়, অনেক সময়ে চোখের নিচে কালো দাগ কিংবা ফোলাভাবের জন্য লিভারের সমস্যা দায়ী হতে পারে। লিভার শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদানগুলি সম্পূর্ণরূপে দূর করতে না পারলে মুখে ক্লান্তি, কালো দাগ এবং ফোলাভাব দেখা দেয়। যদি এই লক্ষণগুলি দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকে, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। 

৩. মুখে ব্রণ এবং ফোঁড়াঃ যদি মুখে ঘন ঘন ব্রণ বা ফোঁড়া দেখা দেয় তাহলে তা শুধু ত্বকের সমস্যা নয়, লিভারে বিষাক্ত উপাদান জমা হওয়ার লক্ষণ হতে পারে। লিভার সঠিকভাবে টক্সিনমুক্ত করতে সক্ষম না হলে ত্বকে স্পষ্টভাবে প্রভাব দেখা যায়।

৪. মুখে চুলকানি বা জ্বালাপোড়াঃ যদি অ্যালার্জি বা বাহ্যিক কারণ ছাড়াই মুখের ত্বকে বারবার চুলকানি বা জ্বালাপোড়া তাহলে এটি লিভারের কার্যকারিতায় ব্যাঘাতের লক্ষণ হতে পারে। যখন লিভার পিত্ত সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না তখন এটি ত্বকের নিচে জমা হয় এবং জ্বালা এবং চুলকানি হতে দেখা যায়। 

৫. মুখে দুর্গন্ধ এবং তেতো স্বাদঃ অনেক সময়ে লিভারের সমস্যার কারণে মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হয় এবং মুখে তেতো স্বাদ থাকে। তাই এটি কেবল মুখের স্বাস্থ্যবিধির কারণে নয়, একইসঙ্গে লিভারের অসুখের লক্ষণও হতে পারে। আসলে লিভার ঠিকমতো কাজ না করলে হজমশক্তি ব্যাহত এবং এটি মুখের স্বাদ এবং গন্ধকে প্রভাবিত করে।