আজকাল ওয়েবডেস্ক: অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার নাটক। সম্প্রতি স্কটল্যান্ডের ২২ বছর বয়সি এক যুবতীকে ঘিরে তীব্র বিতর্ক দানা বেঁধেছে। অভিযোগ, তিনি ভুয়ো গর্ভধারণের নাটক করেছেন। ঘটা করে সাধের অনুষ্ঠান আয়োজন করেছেন। এখানেই শেষ নয়। ধরা পড়ার ভয়ে একটি পুতুলকে নিজের সদ্যোজাত কন্যা সন্তান হিসাবে দেখান জনসমক্ষে। শুধু তাই নয়, এরপরেই তিনি দাবি করেন 'শিশু'টি মারা গিয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, কাইরা কাজিনস নাম যুবতীর। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি পেটে নকল 'বেবি বাম্প' পরতেন, অনলাইনে বাচ্চার স্ক্যান রিপোর্ট এবং ভিডিও শেয়ার করতেন। এমনকী 'জেন্ডার রিভিল' অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করেন। এরপর তিনি 'বনি-লি জয়েস' নামে এক কন্যাসন্তানের জন্মের ঘোষণা করেন। জানা গিয়েছে, তিনি পোস্ট করে জানান যে শিশুটির ওজন ৫ পাউন্ডের বেশি। পাশাপাশি এও জানান এই মাসের শুরুতেই তার জন্ম হয়েছে।
অভিযোগ, বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে কাইরা হাসপাতালে অ্যাপয়েন্টমেন্টের নানা তথ্য নথিভুক্ত করেন। পরিবার-বন্ধুদের জানান যে, গর্ভাবস্থায় থাকাকালীন শিশুটির হৃদ্যন্ত্রে ত্রুটি ধরা পড়েছে। যুবতীর আত্মীয়রা তাঁর জন্য প্রায় ১,০০০ পাউন্ড (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা) মূল্যের নানা সামগ্রীও কিনেছিলেন সদ্যোজাতের জন্য৷
পরে কাইরার শোবার ঘরে তাঁর মা ওই পুতুলটি খুঁজে পাওয়ার পরেই এই প্রতারণা ফাঁস হয়ে যায়। এরপরই ২২ বছর বয়সি ওই যুবতীর পাঠানো কিছু মেসেজের স্ক্রিনশট সামনে আসে। তাতে দেখা যাচ্ছে, তিনি শিশুটির 'বাবা' বলে দাবি করা এক ব্যক্তিকে জানাচ্ছেন যে তাঁদের সন্তান মারা গিয়েছে।
বিতর্কের মুখে, টিকটকে কাইরা স্বীকার করেছেন যে তিনি মিথ্যে বলেছেন। তিনি লিখেছেন, "আমি বিছানায় শুয়ে ছিলাম। তখন মা আমার ঘরে এসে দেখেন ওটা একটা পুতুল। এর আগে আমি নিজেকে সবার থেকে আড়াল করে রেখেছিলাম। এরপরই পরিবারের সকলে আমাকে চেপে ধরে। এক মুহূর্তের জন্যও ভাববেন না যে তাঁরা আমাকে প্রশ্রয় দিয়েছেন। তাঁরা কিছুই জানতেন না। এমনকী শিশুটির বাবা বা তাঁর পরিবারও কিছু জানত না।"
কাইরার বান্ধবী নিভ ম্যাকরবার্ট বলেন, "বাচ্চাটি কখনও কাঁদত না। কাইরা শিশুটিকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসার পর কাউকেই কোলে নিতে দিতেন না, এতেই সন্দেহ বাড়তে থাকে।" নিভ আরও বলেন, "সবাই ওকে বিশ্বাস করেছিল। ও জেন্ডার রিভিল অনুষ্ঠান করে, স্ক্যানের ছবি পোস্ট করে। এমনকী সে বলেছিল বাচ্চার হার্টে ফুটো আছে। তারপর ও মেসেজ করে জানায় যে বাচ্চার জন্ম হয়েছে। আমরা সবাই খুব খুশি হয়েছিলাম।"
কাইরার আরেক বান্ধবী অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি প্রথম থেকেই এই গর্ভধারণকে ভুয়ো বলে সন্দেহ করতেন। তাঁর দাবি, তিনি বুঝতে পেরেছিলেন তাঁর বান্ধবী একটি নকল 'বাম্প' পরছেন। সেটি স্ট্র্যাপ দিয়ে বাঁধা থাকত। ওই বান্ধবী আরও বলেন, "আমি ওকে ১০ বছর ধরে চিনি, ও নানা বিষয়ে মিথ্যা বলেছে।" এ বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি যোগ করেন, "এই পুতুলের বিষয়টি সামনে আসার আগে ও দু’বার আমার বাড়ি এসেছিল। আমি আর আমার মেয়ে দেখেই বুঝেছিলাম যে ওর 'বাম্প' আসল নয়। কেমন এবড়োখেবড়ো ছিল। খুব পাতলা পাজামা পরায় ওর পিঠে বাঁধা স্ট্র্যাপগুলো স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল।"
আরও পড়ুন: চড় মেরেছিলেন মালিক! বদলা নিতে তাঁর পাঁচ বছরের ছেলেকে থেঁতলে খুন বাড়ির গাড়িচালকের
উল্লেখ্য, কাইরা যে ধরনের পুতুল ব্যবহার করেছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে, সেগুলিকে 'রিবর্ন ডল' বলা হয়। এগুলি এতটাই জীবন্ত দেখতে হয় যে থেরাপির কাজে এগুলি ব্যবহার করা হয়। তথ্য অনুযায়ী এই পুতুলগুলির দাম ৩০ পাউন্ড থেকে ২,০০০ পাউন্ড পর্যন্ত হতে পারে।
