আজকাল ওয়েবডেস্ক: সব ঠিকঠাক থাকলে ইস্টবেঙ্গলের রিমোট কন্ট্রোল হয়তো তাঁর হাতেই উঠত। ওড়িশা ছেড়ে লেসলি ক্লডিয়াস সরণীর ক্লাব হয়ে যেত তাঁর নতুন ঠিকানা।
খুব বেশিদিন আগের কথা নয়। লাল-হলুদ কোচ হিসেবে স্টিভেন কনস্ট্যানটাইন ব্যর্থ হওয়ায় ইস্টবেঙ্গল কর্তারা কথাবার্তা শুরু করেছিলেন স্পেনের অভিজ্ঞ কোচ জোসেপ গাম্বাউয়ের সঙ্গে। সেই যাত্রায় গাম্বাউয়ের আর ইস্টবেঙ্গলে আসা হয়নি।
এহেন জোসেপ গাম্বাউ আজকাল ডট ইন-কে বলে দিলেন, ''একটা সময়ে আমার সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের কথাবার্তা হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গলের কোচ হওয়া আর হয়নি আমার। ইস্টবেঙ্গলের কোচ হলে জয় গুপ্তাকে আমি আনতাম।''
আরও পড়ুন: ধ্বংসলীলা বৈভব সূর্যবংশীর সতীর্থর, এক ওভারে পাঁচটা বিশাল ছক্কায় ম্যাচ নিয়ে গেলেন ছোঁ করে
সেই জয় গুপ্তা এলেন কলকাতায়। আরও আগেই হয়তো আসতেন। কিন্তু কথায় বলে, 'বেটার লেট দ্যান নেভার।' জয়কে নিয়ে এখন থেকেই উচ্ছ্বাসে ভাসছেন লাল-হলুদ সমর্থকরা।
জয় গুপ্তাকে হাতের তালুর মতো চেনা গাম্বাউ বলছেন, ''আমার শুভেচ্ছা সব সময়ে রয়েছে জয়ের সঙ্গে। ও ইস্টবেঙ্গলে সফল হবে বলেই আমার বিশ্বাস। অস্কার ব্রুজোঁ খুবই অভিজ্ঞ এবং দক্ষ কোচ। অস্কারের হাতে পড়ে আরও বেশি শাণিত হবে জয় গুপ্তা।''

রেকর্ড অঙ্কের ট্রান্সফার ফি দিয়ে জয় গুপ্তাকে এবার দলে নিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। স্কুল জীবনে তিনি ছিলেন উইঙ্গার। এফসি পুণে সিটির গ্রাসরুট লেভেলে তাঁকে দেখার পরে স্প্যানিশ কোচ জোস জানিয়ে দেন, জয়ের পজিশন সেন্টার ব্যাক।
এফসি পুণে সিটির অনূর্ধ্ব ১৫ দলে থাকার সময়ে পর্তুগালে যান। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর দেশের ক্লাবে খেলেন। পরে চলে যান বুলফাইটিংয়ের দেশ স্পেনে। ইউরোপের দুই দেশে জয় খেলেন প্রায় ছ'বছর। শিবঠাকুরের দেশে ফেরার পরে জয় গুপ্তাকে সেন্টার ব্যাক পজিশন থেকে সাইড ব্যাক পজিশনে নিয়ে আসেন মানোলো মার্কেজ।
মানোলোর সঙ্গে জয় গুপ্তার যোগসূত্র তৈরি করে দেন জোসেপ গাম্বাউ স্বয়ং। ওড়িশার প্রাক্তন স্প্যানিশ কোচ বলেন, ''আমি তখন ওড়িশার কোচ। জয় গুপ্তা এসেছিল ট্রায়াল দিতে। ওকে দেখে বেশ ভাল লেগেছিল। শেষ পর্যন্ত ওড়িশাতে আর সই করা হয়নি জয় গুপ্তার। আমি কোচ মানোলো মার্কেজকে জয়ের কথা বলেছিলাম।'' মানোলোকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ''জয় গুপ্তা সম্পর্কে আমাকে প্রথমে বলেছিলেন জোসেপ গাম্বাউ। আমি কয়েকটা ভিডিও দেখেছিলাম। সেগুলো দেখে মনে হয়েছিল, ও খুব শক্তিশালী খেলোয়াড়।''
Manolo Marquez : Joseph Gombau who told me about Jay gupta ( playing in my city Barcelona), I watched some videos and I thought that this player was player was very powerful . He had played for six years in Spain and Portugal. #isl10 #IndianFootball pic.twitter.com/uNMdJoG2uY
— Hari (@Harii33)Tweet by @Harii33
এফসি গোয়া থেকে এবার কলকাতার বটবৃক্ষ ক্লাবে লেফট ব্যাক জয়। এই শহরের জলহাওয়া অন্যরকমের। একটা ম্যাচে ব্যর্থ হলেই জনরোষের মুখে পড়তে হয়। গাম্বাউ বলছেন, ''আমি যতদূর জয়কে চিনি, ও ইস্টবেঙ্গলে সফল হবেই। ইস্টবেঙ্গল অনেক বড় ক্লাব। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা। আমার মনে হয় জয় সমর্থকদের হতাশ করবে না।''

স্পেনের প্রাক্তন স্ট্রাইকার দাভিদ ভিয়ার সঙ্গে জয় গুপ্তার ছবি পাঠিয়ে জোসেপ গাম্বাউ বলছেন, ''ভিয়ার সঙ্গে জয়ের এই ছবিটা আমিই তুলে দিয়েছিলাম।''
খেলোয়াড় জীবনে গোলকিপার ছিলেন জোসেপ গাম্বাউ। বার্সার যুব দলের দায়িত্বেও ছিলেন। ওড়িশার হেডস্যর থেকে অ্যাস্টন ভিলার অনূর্ধ্ব ২১ দলকে কোচিং করান গাম্বাউ। এখন তিনি সৌদি আরবে যাচ্ছেন নতুন চাকরি নিয়ে। নতুন দেশে গেলেও গাম্বাউয়ের নজর থাকবে ইস্টবেঙ্গল ও জয় গুপ্তার উপরে। শিষ্যকে নিয়ে আশাবাদী স্প্যানিশ কোচ মনে করেন লাল-হলুদ জার্সিতে ভাল খেলে তাঁকে গুরুদক্ষিণা দেবেন জয়।
আরও পড়ুন: মরশুম শুরুর আগেই মাদ্রিদে দুঃসংবাদ, দীর্ঘ সময়ে মাঠের বাইরে ৯৭৯ কোটি টাকার তারকা ফুটবলার
