আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ ১৯ জুলাই কলকাতা ডার্বি। হবে কল্যাণীতে। আইএফের এই সিদ্ধান্তে মোটেই খুশি নয় মোহনবাগান ক্লাব। মঙ্গলবার ছিল মোহনবাগানের কার্যকরী কমিটির সভা। ২৯ জুলাইয়ের অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে একাধিক ঘোষণার পাশাপাশি ক্লাব সচিব সৃঞ্জয় বোস জানান ‘‌টাকা বাঁচানোর কথা ভেবে আইএফএ যুবভারতীতে ডার্বি করছে না। এত বছর পর নিশ্চয়ই আইএফএ–কে ডার্বির গুরুত্ব বোঝানোর প্রয়োজন নেই।’‌ কল্যাণীতে ম্যাচ হলে মোহনবাগান সদস্যদের জন্য আদৌ কত টিকিট দেওয়া হবে, সে নিয়েও সন্দিহান ক্লাব কর্তারা। কারণ বড় ম্যাচে মাঠে বসে খুব বেশি হলে ১৫ হাজার দর্শক খেলা দেখার অনুমতি পাবেন।
বাগান কর্তারা চেয়েছিলেন যুবভারতী না হলেও ডার্বি হোক বারাসতে। কল্যাণীতে ডার্বি আয়োজন নিয়ে অখুশি মোহনবাগান সভাপতি দেবাশিস দত্তও। আইএফএ–কে একহাত নিয়ে তিনি বলেন, দল কলকাতা লিগের ডার্বি খেলবে। তবে কোন দল নামানো হবে, তা নিয়ে সুপার জায়ান্টের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তাছাড়া ডার্বি নিয়ে যে উন্মাদনা থাকে, কল্যাণী স্টেডিয়ামে আয়োজনের কারণে তাতে অনেকটাই ভাটা পড়েছে বলে মনে করছেন তিনি।


এদিকে, সোমবারই আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত জানান, ১৯ জুলাই কল্যাণী স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে দুই প্রধান। চলতি মরশুমে কলকাতা লিগে অধিকাংশ ম্যাচ হয়েছে দুপুরে। তবে চেষ্টা করা হচ্ছে, ফ্লাডলাইটের আলোয় ডার্বি আয়োজন করার। সেক্ষেত্রে ডার্বি শুরু হতে পারে বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে। প্রথমে বারাসত স্টেডিয়ামে ম্যাচটি করতে চেয়েছিলেন আইএফএ সচিব। কিন্তু বারাসত স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ এই মাসের মধ্যে শেষ হবে না বলে জানিয়েছেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। সেক্ষেত্রে বিকল্প ভেন্যু হিসেবে কল্যাণীই ছিল প্রথম পছন্দ। ইতিমধ্যে আইএফএ সচিব কল্যাণী স্টেডিয়ামে পরিদর্শন করে এসেছেন। নিরাপত্তাজনিত কিছু সমস্যা ছিল, সেগুলোরও সুরাহা হয়ে গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। কলকাতা লিগে আপাতত ৪ ম্যাচ খেলে মোহনবাগানের পয়েন্ট ৭।
এদিকে, চলতি বছর মোহনবাগানরত্ন পাচ্ছেন টুটু বোস। আগামী বছর পাবেন প্রয়াত প্রাক্তন সচিব অঞ্জন মিত্র। একথা আগেই ঘোষণা করে দিয়েছিল মোহনবাগানের নতুন কার্যকরী কমিটি। মঙ্গলবার নতুন কমিটির কার্যকরী কমিটির বৈঠক শেষে অন্যান্য বার্ষিক পুরস্কার প্রাপকদের নামও ঘোষণা করে দেওয়া হল ক্লাবের তরফে। মঙ্গলবার মোহনবাগানের কার্যকরী কমিটির বৈঠক শেষে সেরা খেলোয়াড়–সহ অন্যান্য পুরস্কার প্রাপকদের নাম ঘোষণা করলেন সচিব সৃঞ্জয় বোস।
এবছর মোহনবাগানের সেরা ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছেন আপুইয়া। গত মরশুমে মোহনবাগান মাঝমাঠের স্তম্ভ হিসাবে উঠে আসেন মিজোরামের এই ফুটবলারটি। সেরা উদীয়মান ফুটবলারের পুরস্কার পাচ্ছেন দীপেন্দু বিশ্বাস। গত মরশুমে মোহনবাগান রক্ষণে কোচ মোলিনার ভরসার পাত্র ছিলেন দীপেন্দু। সেরা ফরোয়ার্ডের পুরস্কার পাচ্ছেন অজি তারকা জেমি ম্যাকলারেন। গত মরশুমে আইএসএলে ১১টি গোল করেন তিনি।
এই বছর জীবনকৃতি সম্মান দেওয়া হচ্ছে ক্লাবের জার্সিতে দীর্ঘদিন খেলে যাওয়া ক্রিকেটার রাজু মুখোপাধ্যায়কে। সেরা সমর্থকের পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে রিপন মণ্ডলকে। গত মরশুমে জামশেদপুরের বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছিল রিপনকে। এছাড়া মরণোত্তর সেরা ক্রীড়া সাংবাদিক পুরস্কার পাচ্ছেন অরুণ সেনগুপ্ত, মানস চক্রবর্তী। সচিব সৃঞ্জয় বোস জানিয়েছেন, এ বছর মোহনবাগান দিবসের অনুষ্ঠান হবে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। অনুষ্ঠান করবেন সৌরেন্দ্র–সৌম্যজিত এবং ইমন।
পুরস্কার প্রাপকদের গোটা তালিকা:‌ মোহনবাগান রত্ন: স্বপনসাধন বোস
সেরা ক্রীড়া সাংবাদিক: অরুণ সেনগুপ্ত, মানস ভট্টাচার্য (দু’‌জনেই মরণোত্তর)
সেরা সমর্থক: রিপন মণ্ডল
সেরা ক্রীড়া সংগঠক: অমল কুমার মৈত্র (অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সচিব)
সেরা রেফারি: মিলন দত্ত
সেরা অ্যাথলিট: অর্চিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
সেরা হকি খেলোয়াড়: অর্জুন শর্মা
সেরা উদীয়মান ফুটবলার: দীপেন্দু বিশ্বাস
সেরা ফরোয়ার্ড: জেমি ম্যাকলারেন
সেরা ফুটবলার: আপুইয়া
সেরা ক্রিকেটার: রণজ্যোৎ সিং খায়রা
জীবনকৃতি: রাজু মুখোপাধ্যায়