আজকাল ওয়েবডেস্ক: রবিবারের এল ক্লাসিকোর আগে বাজার গরম করে দিয়েছিলেন একা লামিন ইয়ামাল। এতদিন ধরে রোনাল্ডিনহো, মেসি, ইনিয়েস্তার মতো তারকারা যা করার সাহস পাননি মাত্র ১৮ বছর বয়সে ইয়ামাল মাদ্রিদের নামে যা নয় তাই বলে বেড়ালেন। এমনও হয়েছে রোনাল্ডিনহো, ইনিয়েস্তার মতো তারকারা বার্নাবাউতে স্ট্যান্ডিং ওভেশন পেয়েছেন।

দুই ক্লাবের মধ্যে যত বড়ই রাইভ্যালরি থাকুক না কেন এরকম না অসম্মান কেউ করেনি। ইয়ামাল মাদ্রিদকে ‘চুরি’-র অপবাদ দেওয়ার পর থেকেই হাওয়া গরম। ম্যাচে স্প্যানিশ তারকাকে দাঁড়াতে দিলেন না ফুটবলাররা। ম্যাচের পরেও কেউ ছেড়ে কথা বললেন না। পুরো সান্তিয়াগো বার্নাবেউ স্টেডিয়ামের ক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠেন তিনি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের লাইভে ইয়ামাল মজার ছলে বলেছিলেন, ‘রিয়াল মাদ্রিদ সবসময় চুরি করে আর অভিযোগ জানায়।’ কিন্তু মুখে বেশি কথা বললেও কাজের বেলার কিছুই করতে পারলেন লামিন। ম্যাচের শেষে মাদ্রিদ অধিনায়ক ড্যানি কার্ভাহাল ও তাঁর সতীর্থরা ইয়ামালের দিকে তেড়ে যান। ম্যাচে তর্কাতর্কির সৃষ্টি হয়, পরিস্থিতি গরম হয়।

তবে লামিনের এই আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ বার্সা সমর্থকরাই। তাদের মতে, লামিনের এই আচরণ দলের পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলছে। বার্সেলোনার সহকারী কোচ মার্কাস সর্গ আগেভাগেই জানিয়েছিলেন দর্শকদের চাপ ইয়ামালের পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলতে পারে।

মাদ্রিদও চাপে রাখার জন্য বার্নাবাউয়ের ছাদ বন্ধ করে দিয়েছিল। ইয়ামালের ছোট্ট কেরিয়ারে এমন প্রতিকূল অভিজ্ঞতা খুব একটা আসেনি। গত বছর স্পেনের হয়ে ইউরো ২০২৪ জেতার পর বার্সেলোনার ঘরোয়া ট্রেবল জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন তিনি, এমনকি ব্যালন ডি’অর ভোটিংয়ে দ্বিতীয় স্থানও পান।

তবে সামাজিক মাধ্যমে বিতর্কিত মন্তব্য করতে ইয়ামাল বরাবরই তৎপর। গত মরশুমেও তিনি বলেছিলেন, ‘রিয়াল মাদ্রিদের আগে আমাকে হারাক তারপর কথা বলুক।’ রবিবারের জয়ের পর রিয়াল মাদ্রিদ তারকা জুড বেলিংহাম ম্যাচ শেষে ইনস্টাগ্রামে লিখলেন, ‘কথা বলা সহজ।’ অন্যদিকে, বার্সেলোনা মিডফিল্ডার ফ্র্যাঙ্কি ডি জং অবশ্য কার্ভাহালের প্রকাশ্য তর্কে অসন্তুষ্ট।

তাঁর অভিযোগ, ‘কার্ভাহালের কিছু বলার হলে ব্যক্তিগতভাবে বললেই পারত। তারা তো স্পেনের সতীর্থ, একে অপরকে চেনে। মাঠে নাটক করার কী দরকার?’ অন্যদিকে রিয়াল মাদ্রিদের মিডফিল্ডার অরেলিয়েন চুয়ামেনি ঘটনাটিকে তেমন গুরুত্ব দিতে নারাজ।

তিনি বলেন, ‘ওগুলো শুধু কথা, খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না। বরং একটু বাড়তি অনুপ্রেরণা পেয়েছি। এসব বিনিময় তো সব সময়ই ক্লাসিকোর আগে হয়। শেষ পর্যন্ত খেলাটা মাঠেই ঠিক হয়,’। রবিবারের ক্লাসিকোতে ইয়ামালের পারফরম্যান্স ছিল একেবারেই নিস্তেজ। মাদ্রিদের সাইড ব্যাক ক্যারেরাস তাঁকে কার্যত পকেটে পুরে রেখে দিয়েছিলেন।

সর্গ জানান, ‘লামিন সবে চোট সারিয়ে ফিরেছে, ছন্দ পেতে আরও ম্যাচ দরকার।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিপক্ষরা এখন ওর ওপর বিশেষ নজর রাখছে, প্রায়ই দু’জন খেলোয়াড় মিলে আটকানোর চেষ্টা করছে। ও এখনও তরুণ, উন্নতির জায়গা প্রচুর।’ তবে ম্যাচের পর প্রায় ২৪ ঘণ্টা কাটতে চলল, কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় এখনও তীব্র রোষের মুখে লামিন। তীব্র ট্রোলিং, আচরণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সমর্থকরা।