আজকাল ওয়েবডেস্ক: গ্রামের পুকুরে মাছ ধরা কেন্দ্র করে বিবাদ এবং তার জেরে খুন হল এক নাবালক। ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের সালার থানার খাঁড়েরা তেঁতুলতলা গ্রামে। বুধবার দুপুরে ওই নাবালকের দেহ গ্রামের মধ্যে একটি ঝোপের ভেতর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে গোটা গ্রামে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই নাবালকের বয়স ১০। মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ ওই নাবালক একটি ছিপ নিয়ে গ্রামের পুকুরে মাছ ধরতে যাওয়ার জন্য বের হয়। কিন্তু তারপর সে আর ফিরে আসেনি।
বুধবার দুপুর নাগাদ রাইহানের দেহ একটি ঝোপের ভেতর থেকে উদ্ধার করেন গ্রামবাসীরা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ওই নাবালককে শ্বাসরোধ করে খুন করে ঝোপের ভিতরে তার দেহটি লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। সালার থানার এক আধিকারিক জানান, ওই নাবালকের দেহ যাঁরা প্রথম দেখতে পেয়েছিলেন এমন ৭-৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তিনি জানান, মঙ্গলবার ওই নাবালকের পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে একটি অপহরণের মামলা শুরু করা হয়েছিল। নাবালকের দেহ এদিন উদ্ধারের পর এবার খুনের মামলা শুরু করা হবে। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে ইতিমধ্যে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, নাবালকের দেহে কোনও ধারাল অস্ত্রের আঘাত না থাকলেও তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে বলে তাদের অনুমান।
মৃত ওই নাবালকের পরিবারের এক সদস্য জানান, মঙ্গলবার দুপুরে গ্রামের একটি পুকুর থেকে মাছ ধরার জন্য ছিপ নিয়ে ওই নাবালক বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু তারপর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরিবারের লোকেরা সমস্ত আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে খোঁজ করার পর মঙ্গলবার রাত ১২টা নাগাদ গ্রামের একাধিক পুকুরে জাল ফেলে তার দেহের জন্য সন্ধান চালায়। কিন্তু সেখানেও কিছু উদ্ধার হয়নি। বুধবার সকাল থেকে ফের একবার ওই নাবালকের পরিবারের সদস্যরা গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি শুরু করেন। বুধবার দুপুর নাগাদ গ্রামের একটি পরিত্যক্ত এলাকায় ঝোপের মধ্যে মাছি ভনভন করতে দেখে এলাকার লোকজন সেখানে তল্লাশি শুরু করেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যে ঝোপের ভেতর থেকে রাইহানের দেহ উদ্ধার হয়। তার দেহের কাছে মাছ ধরার ছিপটি পড়েছিল।
মৃতের পরিবারের লোকেদের অনুমান, গতকাল মাছ ধরতে যাওয়ার পর সম্ভবত ওই নাবালকের সঙ্গে কারও মাছ ধরা নিয়ে গন্ডগোল হয়েছিল। এরপর তারাই খুন করে দেহটি লোপাট করার উদ্দেশ্যে ঝোপের মধ্যে ঢুকিয়ে রেখেছিল। বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে ওই ঝোপের মধ্য থেকে দেহটি অন্যত্র সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু গ্রামবাসীরা তার আগেই দেহটি দেখতে পেয়ে যাওয়ায় সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। কিন্তু কার সঙ্গে ঝগড়া পর এই খুন করা হয়েছে সে বিষয়ে বাড়ির লোক কিছুই বলতে পারেনি।
স্থানীয় বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন, “একটি নিষ্পাপ শিশুকে খুন করার ঘটনার নিন্দার ভাষা আমার কাছে নেই। আমি পুলিশ প্রশাসনের কাছে দাবি রাখছি ওই নাবালক খুনের ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।”
