আজকাল ওয়েবডেস্ক: নদীতে ঝাঁপ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ার! দেহ উদ্ধার হল মেদিনীপুর শহরের উপকন্ঠে কাঁসাই (কংসাবতী) নদী থেকে। স্থানীয়দের সহযোগিতায় রেল পুলিশ ও জেলা পুলিশের তরফে যৌথভাবে দেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য শহরের উপকন্ঠে নদী তীরবর্তী কাঁসাই হল্ট এলাকায়। 

রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেলে (৫টা ৫০মিনিটে) হাওড়া-আদ্রা শিরোমণি এক্সপ্রেসে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া সোহম পাত্র। সঙ্গে ছিলেন তাঁর মা। রাত্রি সাড়ে ৮টা নাগাদ ট্রেন যখন মেদিনীপুর স্টেশনে ঢোকার ঠিক আগে কাঁসাই হল্টের কাছে পৌঁছয়, সেইসময়ই সোহমের মা শৌচালয়ে যান। আর সেই ফাঁকেই চলন্ত ট্রেন থেকে নদীতে ঝাঁপ দেন সোহম। যদিও, কামরার অন্যান্য যাত্রীরা বিষয়টি বুঝতে পারেননি! কয়েক মিনিটের মধ্যেই ট্রেন মেদিনীপুর স্টেশনে ঢোকে। এদিকে, শৌচালয় থেকে বেরিয়ে ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে, অন্যান্য যাত্রী-সহ টিকিট পরীক্ষককে বিষয়টি জানান সোহমের মা। মেদিনীপুর স্টেশনে পৌঁছনোর পর রেল পুলিশকেও জানানো হয় বিষয়টি। সেইসময়ই দুর্ঘটনার বিষয়টি একপ্রকার নিশ্চিত হয় সকলেই। রাতেই রেল পুলিশের তরফে নদীতে খোঁজাখুজি শুরু হয়। তবে, দেহ মেলেনি। বুধবার সকালে কাঁসাই হল্ট এলাকায় রেল ওভারব্রিজের ঠিক নিচেই দেহ ভেসে উঠতে দেখেন রেল পুলিশের লোকজন। খবর দেওয়া হয় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশকেও। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় গুড়গুড়িপাল থানা ও খড়গপুর টাউন থানার অধীন সাদাতপুর ফাঁড়ির পুলিশ। ওই এলাকাটি সাদাতপুর ফাঁড়ির অধীনে বলেই জানা গিয়েছে। রেল পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় বুধবার সকাল ১১টা ১৫ মিনিট নাগাদ দেহ উদ্ধার হয়। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন সোহমের মা-সহ পরিবারের সদস্যরা।

আরও পড়ুন: ডায়েরিতে জড়ানো হাতে লেখা ‘এনআরসি আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী’, আগরপাড়ার প্রৌঢ়ের করুণ জবানী

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর ২০-র সোহম যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিটেক প্রিন্টিংয়ের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া। বাড়ি বাঁকুড়া শহরের ১৫নং ওয়ার্ডে। মঙ্গলবার রাতেই পরিবারের সদস্যরা মেদিনীপুরে পৌঁছেছেন। মেদিনীপুর শহরে সোহমের মামাবাড়ি বলেও জানা গিয়েছে। ঘটনা ঘিরে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। মানসিক অবসাদ থেকেই মেধাবী ওই পড়ুয়া এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, দেহ উদ্ধার হয়েছে। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হবে ময়নাতদন্তের জন্য। কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। তবে, একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।