আজকাল ওয়েবডেস্ক: তাঁকে যখন দলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হল গোটা দেশ সেটার বিরুদ্ধে। স্যোশাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিং হয়ে গেল যশস্বী জয়সওয়ালকে বসিয়ে বরুণ চক্রবর্তী কেন? তাঁকে বলা হল কোটার খেলোয়াড়, আরও কত কী। কিন্তু বর্তমান ভারতীয় দলের মধ্যে একটা বিশেষত্ব আছে। তাঁরা সকলেই বিতর্কের জবাবটা দিতে পছন্দ করেন মাঠের ভিতরেই। বরুণই বা সেটা থেকে বাদ যাবেন কেন? গ্রুপ লিগে নিউজিল্যান্ড ম্যাচ থেকেই সুযোগ এসেছিল। সেটাকে কাজে লাগিয়ে ফাইনালের বড় মঞ্চেও সমস্ত সমালোচকদের চুপ করিয়ে দিলেন তিনি। বরুণের প্রথম ইন্ডিয়া খেলা এই সৌদি আরব আমিরশাহিতেই।
২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অনেক প্রত্যাশা নিয়ে দলে নেওয়া হয়েছিল বরুণ চক্রবর্তীকে। কিন্তু ফল হয়েছিল উল্টো। বেধড়ক মার খেয়ে তাঁকে বাদ পড়তে হয়েছিল দল থেকে। এবার ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি সাক্ষী থাকল অন্য এক বরুণ দেবতার। যাঁর রোষে ভেসে গেল নিউজিল্যান্ড। তবে বরুণ চক্রবর্তী হওয়া সহজ কথা নয়। তিনি একইসঙ্গে অনেককিছু। সচরাচর একই অঙ্গে বহুরূপের দর্শন পাওয়া যায় না। উইকেটকিপার হিসেবে ক্রিকেট শুরু করেছিলেন। একসময়ে পেস বলও করতেন। অভিনয় করেছেন সিনেমায়। হতে চাইতেন পরিচালক। তিনি একজন স্থপতিও। সব বাধা কাটিয়ে বর্তমানে বরুণের পরিচয় একটাই।
তিনি ভারতীয় দলের তারকা স্পিনার। ফাইনালের আগে নিউজিল্যান্ডে কোচ জানিয়েছিলেন, বরুণ চক্রবর্তীকে খেলতে বিশেষ পড়াশোনা করে আসবেন তাঁরা। কিন্তু বরুণ দেবতার রোষ থেকে কী এত সহজে বাঁচা যায়? ঝুলিতে একাধিক সারপ্রাইজ নিয়ে আসেন তিনি। তাতেই তো কাবু করে দিলেন ইয়ং আর বিপজ্জনক গ্লেন ফিলিপসকে। অস্ট্রেলিয়ার যে খেলোয়াড়কে নিয়ে ১৪০ কোটি ভারতবাসী চিন্তায় ছিল সেই ট্র্যাভিস হেডকে ফিরিয়ে বরুণ দেশবাসীকে বলে দিয়েছিলেন, 'ম্যায় হুঁ না'। তিনি মাঠের বাইরে যেমন নীরব, ২২ গজও তাই। উইকেট নিলেও খুব একটা আগ্রাসন দেখান না।
তাঁর মতো খেলোয়াড়রা বরাবর নিজের কাজটা চুপচাপ করে দিয়ে বেরিয়ে যেতেই পছন্দ করেন। এদিনও সেটাই হল। মিডল ওভারে তিনি আর কুলদীপ নিঃশব্দে কিউই ব্যাটারদের শান্ত রেখে দিয়ে বেরিয়ে গেলেন। জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করতে নেমে বরুণ বুঝিয়ে দিলেন, তিনি লম্বা রেসের ঘোড়া। কোটার খেলোয়াড়, টি- টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট এসব অতীত। এবার যেন তিনি বরুণ চক্রবর্তী ২.০। গত আইপিএল থেকে শুরু করে ভারতের বি-দলে সুযোগ পাওয়া। সেখানে একের পর এক ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্স করে এবার ভারতের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়। পরের মিশন? সময় বলবে!
